প্রশাসন রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের প্রধান একটি কাঠামো । সৎ, দক্ষ এবং কর্মঠ জনবলই বলিষ্ঠ, কল্যাণকর ও পরিচ্ছন্ন প্রশাসনের মূখ্য হাতিয়ার। বলা যায় সমাজ পত্তনের শুরু থেকে প্রশাসন চালু হয়। দৃশ্যত সুলতানী আমলে পাঠান সুলতান শের শাহ্ তাঁর প্রসারিত এলাকাকে ১৯ টি সরকারে ভাগ করে আমিন দিয়ে সরকার চালাতেন। মোঘল আমলে বঙ্গোদেশে ২৪ টি সরকারের মধ্য খলিফাতাবাদ ছিল একটি। এ সময় ফৌজদার ছিলেন সরকার প্রধান। বৃটিশ ভারতে ওয়ারেন হেষ্টিংস চলমান প্রশাসনের প্রবক্তা। লর্ড-কর্নওয়ালিশ সেই প্রশাসনের উন্নত কাঠামোর নির্মাতা। বৃটিশ ভারতের প্রশাসন মানেই রাজস্ব-আদায়ের কৌশল। ইউরোপীয় জ্ঞান দীপ্তির সুফলও পৌছে পরবর্তীকালে প্রশাসনের হাত ধরে। বিশেষতঃ উনবিংশ শতকে উপমহাদেশে নানা কালাকানুনকে কেন্দ্র করে শাসক ও শাসিতের মধ্যে তিক্ত সম্পর্ক চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে এবং সিপাই বিপ্লব ঘটে যায়। বিপ্লবের আগুন নেভাতে খোদ ইংল্যান্ড কর্তৃপক্ষ ভারতবর্ষে জনকল্যাণকর কাজে হাত দেয়। ১৭৬৫-১৮৫৮ পর্যন্ত প্রশাসনের সবকিছুই প্রবাসীদের স্বার্থে করা হয়। ১৮৬০ সালে ৪২ ধারা ধরে জেলার নিম্নসত্মরে মহাকুমা স্থাপিত হয়। উপমহাদেশের অধিকাংশ মহাকুমা বিশেষ করে বাংলায় এই শতকের ষাটের দশকে জন্মলাভ করে। ১৮৬৩ সালে বাগেরহাট মহাকুমায় উন্নীত হয়।মিঃ সান্ডার্স ছিলেন প্রথম মহাকুমা প্রশাসক। বাগেরহাট ১৮৮২ সালের পূর্বে ছিল যশোর জেলাধীন। যশোর জেলা হয় ১৭৮১ সালে। তখন রাজস্ব আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা করতে হতো। প্রবাসীদের অনুমতি ব্যতীত তা খরচ করা যেত না। অনুমতি চাইলেও পাওয়া যেত না। তাই সামান্য উন্নয়নের অর্থ স্থানীয় সামর্থ্য পরিবারদের যোগান দিতে হতো। কাড়াপাড়া, মঘিয়া, বনগ্রাম এলাকার খ্যাত রাজপরিবার তিনটি একাজে প্রশাসনকে সহযোগিতা দিত। শাসন ও শোষন উভয় কাজে এ কালপর্বে মহাকুমায় বেশ কয়েকটি থানা স্থাপিত হয়। বলা প্রয়োজন মহাকুমা সদরে থানা স্থাপনার পূর্বে কচুয়াতে পূর্ণাঙ্গ থানা এবং ফকিরহাটে পুলিশ চৌকি ছিল। বাগেরহাট ও রামপাল থানা স্থাপিত হয় ১৮৬৩ সালে। মোড়েলগঞ্জ ১৮৬৬ সালে। কচুয়া ও ফকিরহাট ১৮৬৯ সালে। শরণখোলা থানা স্থাপিত হয় ১৯০৮ সালে। মোংলা থানা হয় ১৯৭৫ সালে এবং চিতলমারী ১৯৮১ সালে। পাকিস্তান কালপর্বে ১৯৬৩ সালে প্রশাসন থানায় সম্প্রসারিত হয়। সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) পদ সৃষ্টি করে থানা পরিষদের মাধ্যমে মহাকুমার নিম্নস্তরে প্রশাসন পরিচালনার ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৮২ সালে দেশে সামরিক আইন জারি করার পর থানাকে প্রথমে উন্নীত থানা ও ১৯৮৩ সালে উপজেলা করা হয় (অধ্যাদেশ ৫৯/৮২ এর মাধ্যমে)। ১৯৮৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট জেলায় উন্নীত হয় {এস আর ও নং ৮০-এল/এম ই আর(জে এ-।। ) ২৬৪/৮৩-১০৬, তারিখ ২৩ ফেব্রম্নয়ারী ১৯৮৪}। জেলা উদ্ভোধন করেন তৎকালীন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এইচ,এম এরশাদ। জনাব মোঃ রেজওয়ানুল হক ছিলেন প্রথম জেলা প্রশাসক। প্রশাসন বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত। সুদুর অতীত হতে অদ্যাবধি প্রশাসনের সর্বস্তরে একজন প্রধান নির্বাহী আছেন। ১৯৮৪ সালে বাগেরহাট জেলায় উন্নীত হওয়ার পর থেকে জেলা প্রশাসন এ জেলাবাসীকে বিভিন্ন সেবা প্রদান করে আসছে
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS